করোনায় কিন্ডারগার্টেনগুলির দুঃসময় : মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আসসালামু আলাইকুম, সর্বপ্রথম আল্লাহর নিকট রহমত প্রার্থনা করছি আপনার, আপনার পরিবার, এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সর্বোপরি বিশ্বের সকল মানুষের জন্য। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন আমাদের সকলকে ক্ষমা করেন, করোনা নামক এই মরণব্যাধি ভাইরাস থেকে রক্ষা করেন। আমীন। সে সাথে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ও সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমার সকল ভুল ভ্রান্তি ও অপারগতার জন্য।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আসসালামু আলাইকুম, সর্বপ্রথম আল্লাহর নিকট রহমত প্রার্থনা করছি আপনার, আপনার পরিবার, এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সর্বোপরি বিশ্বের সকল মানুষের জন্য। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন আমাদের সকলকে ক্ষমা করেন, করোনা নামক এই মরণব্যাধি ভাইরাস থেকে রক্ষা করেন। আমীন। সে সাথে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ও সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমার সকল ভুল ভ্রান্তি ও অপারগতার জন্য।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আশা করছি আমার এই আবেদনটি আপনি পর্যন্ত পৌঁছবে। মানুষ ভুল ভ্রান্তির উদ্ধে নয়, তারপরও ইতিমধ্যে আপনার অনেক মানবিকতা, ধৈর্য্য, সাহসিকতা, প্রজ্ঞা, মেধা, সহিষ্ণুতা, সার্বিক সফলতা আমরা তথা সারাবিশ্ববাসী দেখছে। যাহা প্রশংসার দাবীদার। আজ দেশ, জাতী তথা সারা বিশ্বের এক ক্লান্তিলগ্নে সারা বাংলাদেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, শিক্ষক শিক্ষিকা, কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দের অনুরোধে একটি বিশাল জনগোষ্ঠী ও এই বিশাল সেক্টরের পক্ষ থেকে একজন শিক্ষক সংগঠক হিসেবে আপনার নিকট এই বিশেষ আবেদনটি করতে বাধ্য হলাম।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি এই দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। এ দেশের সব কিছু দেখার দায়িত্ব মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনার উপর অর্পণ করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ এই দেশে এমন কিছুই নেই যা আপনার দর্পনে নেই, তারপরও আমি বিনয়াবনত হয়ে আপনাকে একটু স্বরণ করিয়ে দিতে চাই, এই প্রিয় বাংলাদেশের একটা বিশাল সমাজ হল শিক্ষক সমাজ এই শিক্ষসমাজের প্রতি সবসময় আপনারও সম্মান/শ্রদ্ধা ও সহযোগীতা সর্বকালের স্বরণীয়। আর এর একটি বিশাল অংশ হল কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তিমালিকানাধীন স্কুল এবং কলেজগুলো। এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার বা অন্য কোন সংস্থার কোন প্রকার সাহায্য সহযোগীতা ছাড়া সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত। যার সংখ্যা সরকার গঠিত ট্রাক্সফোর্সের আনুমানিক পরিসংখ্যান ৬০,০০০/ (ষাট হাজার) প্রকৃতপক্ষে এর সংখ্যা আরো অনেক বেশী। সরকরী, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি এই ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সকল শ্রেণির প্রায় ১ কোটির বেশী শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে, সেই সাথে নিজ উদ্যোগে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে যাহা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। তাছাড়াও এই নিঃস্বার্থ বেকারত্ব নিরশন সরকারের বিরাট একটা সহায়ক ভুমিকা পালন করছে। আরো উল্লেখ্য যে এ দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৪ কোটি মানুষ এই ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কোন না কোন ভাবে সম্পৃক্ত। এই পর্যন্ত লক্ষনীয় যে দল মত নির্বিশেষে এ দেশের মানুষগুলো আরো বেশী পাওয়া ও অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন দল, গোত্র, বেনার ও সংগঠনে সংগঠিত হয়ে রাস্তায় নেমে কিছুটা হলেও তাদের দাবী দাওয়া আদায় করেছে। কিন্ত এই বিশাল জনগোষ্ঠীর সেক্টর কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন শত কষ্টে জীবিকা নির্বাহের পরও বিভিন্ন (অভিন্ন) দাবী দাওয়া এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য কিছু লিফলেট, পোষ্টার, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি ছাড়া শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা ও সরকারের আস্থা অর্জনের জন্য রাস্তায় নেমে, হরতাল, অবরোধ বা আন্দোলন করে সরকার তথা জনগনকে কষ্ট দেই নি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আপনার একটা বিষয়ে আস্থাশীল, চোখে দেখেছি এবং বিশ্বাস করি, আপনি ধৈর্য্যশীল ও ত্যাগীদেরকে মূল্যায়ন করেন যাহা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। আমরাও এই ত্যাগী ও ধৈর্য্যশীলদের অন্তভূক্ত। তাই বর্তমানে এক বিশেষ পরিস্থিতিতে আপনার নিকট বিনয়াবনত মানবিক এই আবেদনটি করলাম। বর্তমান বিশ্বে যে করোনা মহামারী চলছে তা মোকাবেলার জন্য গত ১৬ মার্চ ২০২০ খ্রীঃ সোমবার দুপুরে আপনার নির্দেশে হঠাৎ করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হল। আমরাও আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মনিং শিপ্টে না পাড়লেও ডে- শিপ্টে ১০ মিঃ নোটিশে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করি। আমরা টেবিল গোছানোর সময় পর্যন্ত পায়নি। আপনাকে আরো স্বরণ করিয়ে দিতে চাই এই সব প্রতিষ্ঠান ৯৯% ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত বিধায় মাসিক সম্পূর্ণ আয়ের ৪০% ঘড় ভাড়া, ৪০% সম্মানিত শিক্ষক শিক্ষিকা কর্মকরতা কর্মচারীবৃন্দের বেতন ভাতা, বাকী ২০% বা তারও বেশী গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্যখাতে ব্যয় হয়। তারপরও আমরা এটাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছি এবং অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই বিধায় অনেক প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ভর্তুকি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। আপনি জেনে খুশি হবেন যে, আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১০ মিঃ নোটিশে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই করি নাই আমরা সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দর হোম কোয়ারান্টাইনও নিশ্চিত করেছি। যে বন্ধটা ছিল ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ ২০২০ খ্রীঃ। এরপর আরেকটা বিজ্ঞপ্তিতে তা বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল বা ১০ এপ্রিল ২০২০ খ্রীঃ শুক্রবার পর্যন্ত করা হয়। আমি আশংকা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রয়োজনে রোজা ও ঈদুল ফিতরের বন্ধ যোগ করে যদি ঈদুল ফিতরের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ আসে আমাদের কী অবস্থা হবে? বর্তমানে সারা বাংলাদেশ থেকে ফোন আসছে বাড়ির মালিকরা প্রতিষ্ঠানের ফেব্রুয়ারী মাসের ঘড় ভাড়ার জন্য প্রেশার দিচ্ছে, সামনে যোগ হচ্ছে মার্চ মাসের ঘড় ভাড়া আর ষদি ঈদুল ফিতর পর্যন্ত বন্ধ হয় তাহলে আবার এপ্রিল মাসের ঘড় ভাড়া, সাথে ৩ মাসের শিক্ষক শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দের বেতন ভাতা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য ব্যয়ভার।
মহোদয়, আমরা এমন একটা সমাজ, ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও শিক্ষক শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ আমরা সকলেই দিশাহারা, বর্তমানে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন যাপন করছি। একদিকে করোনা মহামারী আতংক অন্যদিকে জীবিকা নির্বাহ। আমাদের অনেকের শেষ আশ্রয়স্থল প্রাইভেট টিউশনিও বন্ধ। আমরা এমন একটা আত্নমর্যদার শিক্ষক সমাজ পারছিনা কাউকে বলতে, পারছিনা সইতে। আপনার মহানুভবতায় গৃহহীন -ভূমিহীনরা ৬ মাসের খাদ্য ও নগদ অর্থ পাবে। গার্মেন্টসের মালিক শিল্পপতিরা তাদের শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা পাবে। সরকারী, বেসরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীরা বাসায় বসে থাকলেও বেতন ভাতাসহ সকল সুবিধা ভোগ করবে। পেটের তাগিদে শ্রমিকরা হয়ত কাজে ফিরবে কিন্ত আমরা এই বিশাল ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালকবৃন্দ এই বিশাল ব্যয়ভার কিভাবে বহন করব ? যেখানে কোন বানিজ্যিক ব্যাংক আমাদের লোন পর্যন্ত দেয় না। আমরা নাকি লোনের আওতায় আসি না।
মাননীয় মাতৃতুল্য প্রধানমন্ত্রী, এই দুঃসময়ে শিক্ষক সমাজের এই দুর্দশার কথা আপনার মত জ্ঞানী, বিচক্ষণ, সফল ও মহান মানুষকে এর বেশী বুঝাতে হবে না। আমাদের উপরোক্ত বিষয়াদি আপনার আন্তরিক সুবিবেচনা ও বিশেষ মানবিকতায় বাংলাদেশের সকল ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই বিশাল ব্যয়ভার বহনের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা অধিদপ্তরের মাধ্যমে যেভাবে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয় অথবা যে কোন মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের আনুমানিক ব্যয় অনুপাতে আর্থিক সহযোগীতা প্রদান করলে এই বিশাল শিক্ষক সমাজ আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এবং আপনার কথা মনে রাখবে।
পরিশেষে ভুল ভ্রান্তির জন্য আবারও ক্ষমা চেয়ে আপনাকে আমাদের সফলতা ও সরকারকে সহযোগীতার বিষয় অবগত করতে আপনার সরাসরি সাক্ষাৎ প্রার্থনা করছি। আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য, মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। করোনা যুদ্ধেও জয়ী হব- ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে ভুল ভ্রান্তির জন্য আবারও ক্ষমা চেয়ে আপনাকে আমাদের সফলতা ও সরকারকে সহযোগীতার বিষয় অবগত করতে আপনার সরাসরি সাক্ষাৎ প্রার্থনা করছি। আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য, মঙ্গল ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। করোনা যুদ্ধেও জয়ী হব- ইনশাআল্লাহ।
বিনীত নিবেদক
এম ইকবাল বাহার চৌধুরী
চেয়ারম্যান
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ।
ফোনঃ 01819-315616.
এম ইকবাল বাহার চৌধুরী
চেয়ারম্যান
কেন্দ্রীয় কমিটি
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ।
ফোনঃ 01819-315616.
কোন মন্তব্য নেই